পুরনো বৃত্তে চবি ছাত্রলীগ

প্রথম প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ

চবি প্রতিবেদক

c uআলমগীর টিপুকে সভাপতি ও এইম এম ফজলে রাব্বি সুজনকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়(চবি) শাখা ছাত্রলীগের ১ বছরের কমিটি ঘোষনা করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ।

কমিটি ঘোষনা পর দীর্ঘদিনের বগিভিত্তিক রাজনীতিকে জিরো টলারেন্স, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়,বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্বতিক সংগঠনের সাথে আলোচনা,সাংবাদিকদের সার্বিক সহায়তা প্রদান,রক্তদান কর্মসূচি সহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয় ছাত্রলীগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় সহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রশাংসা কুড়ায় বর্তমান কমিটি।

এছাড়াও ক্যাম্পাসে বহুদিনের আধিপত্যা বিস্তার করা মৌলবাদি ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম রোধে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে চবি ছাত্রলীগ।

কিন্তু হঠাৎ করেই যেন খেল হারিয়ে বসেছে চবি ছাত্রলীগ। নিজেদের মধ্যেকার আন্তকোন্দল, সাংবাদিক নির্যাতন,নারী লাজ্ঞনার মত এবং দলীয় কার্যক্রম এ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর প্রয়োগ। যার ফলশ্রুতিতে গত ২৫ আগষ্ট আবারো সেই পুরানো সেই চিত্র দেখা গেল চবি ছাত্রলীগ কে।

সোরওয়াদী হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ। সংঘর্ষে পুলিশের এক এস আই সহ উভয় পক্ষের অন্তত সাত জন আহত হয়।

এদিকে নতুন কমিটিকে পুনাঙ্গ কমিটিতে রুপ দেওয়ার জন্য এবং ছাত্রলীগের মধ্যে নতুন ধারার রাজনীতি চালু করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মিছিল মিটিং এবং নবীনদের ছাত্রলীগে অংশগ্রহন এর জন্য নানা সাংগঠনিক কর্মসূচি হাতে নেয় চবি ছাত্রলীগ। এতে স্বশরীরে অংশগ্রহন করতে দেখা গেছে সাধারণ সম্পাদককে।

এদিকে দলীয় কর্মকান্ডে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করতে না চাইলেও জোর করে হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনি এক অভিযোগে প্রতিলতা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ উঠে। পরে মেয়েটি নিজের নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এছাড়াও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১২ আগষ্ট শাটল ট্রেনে বন্ধু সহকারে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপ্রভাত বাংলাদেশের প্রতিনিধিকে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি এবং রাইজিং বিডির প্রতিনিধিকে শারীরিকভাবে লাজ্ঞিত করে।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলগুলোতে ব্যাপকহারে মোবাইল,ল্যাপটপ সহ প্রয়োজনীয় জিনিস চুরির ঘটনা বেড়ে যায়। এ ঘটনায় সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেয়।এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে এক প্রেস কিজ্ঞপ্তির মাধম্যে ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে সাময়িক(২১দিনের)বহিস্কার করে চবি ছাত্রলীগ।

সর্বশেষ শাহ আমানত হলের কিছু ছাত্রলীগ কর্মী আলাওল হলের ওয়েটিং রুমের বেজ্ঞ নেওয়াকে কেন্দ্র করে এক নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর করে।ঐ দিন রাতেই শহীদ তাপস স্মতি টুনামেন্ট এর চাঁদা ভাগাভাগি কে কেন্দ্র করে ফের উভয় পক্ষের মধ্যে ফের উত্তেজনা দেখা দেয়।পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে।এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক এর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ইমদাদ এর মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়।

এতেও যেন বিতর্ক ছাড়ছেনা।গত ১৪ আগষ্ট সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অডিটোরিয়ামে সমাজতত্ত বিভাগের ২য় বর্ষের নবীন ও প্রবীন বিদায় অনুষ্ঠানে এক আদিবাসি শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাজ্ঞিত করে এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আসলেও কিছু করতে পারবে বলে শাসায়।এ ঘটনায় মেয়েটি গতকাল প্রক্টর অফিসে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন, প্রতিটি ঘটনার পেক্ষাপট এক নয়।প্রতিটি ঘটনার আমরা সুষ্ঠ ও বিবেচনার আয়ত্তায় এনেছি।দলীয় স্বার্থে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।
সাংবাদিক এবং নারী লাজ্ঞনার মত স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে তিনি বলেন,নিতান্তই ব্যাক্তিগত বিষয় বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক এইম এম ফজলে রাব্বি সুজন বলেন,ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের সংগঠন।এখানে কেউ নিজ স্বার্থকে কাজে লাগিয়ে সংগঠন এর সন্মান ক্ষুন্ন করতে পারবে না।তিনি আরো বলেন,বর্তমান চবি ছাত্রলীগ যে কোন বিষয়কে যথাযথ বিবেচনায় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

উপরোক্ত বিষয়গুলোকে বিছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে এ ধরনের ঘটনা নিছক ভুল বোঝাবুঝি থেকে সূষ্টি হয়ে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বর্তমান কমিটির আগে ছাত্রলীগ বহুবার নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়ায়।তখন কোন কমিটি না থাকাকে দোষারোপ করেছেন তারা।কিন্তু বর্তমানে কমিটি থাকার পর ও সংঘর্ষ থামছে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে টিপু বলেন,ছাত্রলীগ একটি বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন এখানে নিজেদের মধ্যেকার কিছু আন্তকোন্দল বিয়ষটিকে একেবারে উপেক্ষা করা সম্ভব হয় নয়।সংগঠনের বিভিন্ন সীমাবদ্বতা উল্লেখ করে তিনি বলেন,যে বিষয়গুলোতে ব্যবস্থা গ্রহন করার সম্ভব করা হয়না সে বিষয়গুলোতে আমাদের কিছু করার থাকে না।

এদিকে পুর্নাঙ্গ কমিটি আধৌ না হওয়া এবং নতুন করে সমঝোতার ভিত্তিতে হল কমিটি কতটুকু ফলপ্রসু হবে সে সন্দেহ রয়ে গেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

প্রতিক্ষণ/এডি/ডিএইচ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G